করোনায় ভারতের গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে মুসলিমদের, প্রাণে বাঁচতে ঠাঁই নদীর চরে খোলা আকাশের নীচে ই বা নিউজ ই বা নিউজ প্রকাশিত: ৫:২৪ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৯, ২০২০ ছবি অনলাইন English বাংলা news ডেস্ক: ছোট ছোট ফুট ফুটে বাচ্চাদের কোলে নিয়ে, হাত ধরে প্রাণ বাঁচাতে সোয়ান নদীর চরে এসে গা ঢাকা দেয় মুসলিম এই পরিবারগুলি। পাঞ্জাব এবং হিমাচল প্রদেশের একেবারে সীমান্ত লাগোয়া এক নদীর তটে। অভিযোগ তাঁদেরকে গালাগালি, মারধোর করে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। এঁরা প্রত্যেকেই হশিয়ারপুর জেলার তালওয়ারা ব্লকের বাসিন্দা। ছোট, ছোট মাটির কুঁড়ে ঘরেই দিন যাপন হত তাঁদের। “আমি ওদেরকে (গ্রামের সংখ্যাগুরু হিন্দুদের কথা বলা হচ্ছে) জিজ্ঞেস করি কেন আমাদেরকে মারধোর করছে। ওরা আমাদেরকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। বলে আমাদের নাকি, ব্যামো ধরেছে,” সারাজ দীন সংবাদ মাধ্যমকে কথাগুলি জানান। সে অন্যান্য ক্ষুধার্ত শিশু, মহিলা ও পুরুষ দের সঙ্গে এখানে পালিয়ে আসে প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে।এঁদের অনেকেই যৌথ পরিবারের সদস্য। তাঁদের সকলকে গ্রাম থেকে জোর করে উৎখাত করা হয়েছে। “এমনকি পুলিশও আমাদেরকে পাশের রাজ্য হিমাচলে যেতে দিচ্ছে না। গরম পড়লে আমরা ওদিকে বসবাস করি,” বলেন সারাজ। তাঁর মায়ের বয়স আশি ছুঁই ছুঁই। গায়ে আগের মত জোর নেই। বয়সের কারনে নানা রোগ-জাড়ি দেহে বাসা বেঁধেছে । কিন্তু ওষুধের জন্য দোকানে গেলে, দোকানদার দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয়। সারাজের স্ত্রীকে দোকানদার ধমকায়। বলে ” ব্যামো কোথাকার, তোরা মুসলিমরা ভাইরাস ছড়াচ্ছিস”। সারাজের আর এক জ্ঞাতি ভাই জানায় যে, আশেপাশের গ্রামের লোকজন তাদেরকে নানা ভাবে হেনস্থা, অপমান করতে থাকে। দিল্লিতে তবলীগ জামাতের ঘটনার পর থেকেই এইসব শুরু হয়। ” আমাদের কেউ কোনদিন দিল্লি শহর চোখেই দেখেনি। কিন্তু, তারপরও এখানকার লোকজন আমাদের জীবন নিয়ে টানাপোড়েন শুরু করেছে। প্রশাসন ও কোনো সহযোগিতা করছে না,” জানান তিনি। দুজন তাঁদের আধার কার্ড দেখিয়ে বলে। এই দুঃসময়ে এগুলো কোনো কাজে লাগছে না।সারাজের পরিবার একা নয়। এখানে তাঁদের মতো আরো জনা ৮০ ব্যক্তি শিশু, স্ত্রী, সন্তানদেরকে নিয়ে খোলা আকাশের নীচে। এই নির্জন প্রান্তরে আশ্রয় নিয়েছে। প্রত্যেকেই ক্ষুধার্ত। খাবারের জোগাড় নেই। রেশন পায় নি। ঘটনার আগের দিন জরুরি পরিষেবায় ফোন কল করেও কোন সুরাহা মেলেনি। সারাজ জানায় না খেতে পেয়ে ছটা বাছুর মারা পড়েছে। ” তিনটে বাছুর কবর দিয়েছি। বাকি তিনটে এখন আমার সামনে মরে পড়ে আছে”, জানান তিনি। দ্য ওয়্যার এর জনৈক সাংবাদিক হশিয়ারপুরের ডেপুটি কমিশনার অপনিত রাওয়াতের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি জানান যে, হশিয়ারপুরের পুলিশ সুপার ইন্টেন্ডেট গৌরব গর্গকে নির্দেশ দিয়েছি “দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য”। “আমি আরো অভিযোগ পেয়েছি গতকাল যে কিছু লোকজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তালওয়ার এবং হাজীপুরে গুজজরদেরকে হেনস্থা করে,” এমনটাই জানান পুলিশের এই শীর্ষ আধিকারিক। সূত্রঃ টিডিএন বাংলা SHARES জাতীয় বিষয়: